দ্রুত-শরীরের-ওজন-কমানোর-স্বাস্থ্যসম্মত-৯টি-উপায়

ওজন কমানো আজকের দিনে অনেকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক জীবনযাত্রা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চার অভাবের কারণে অধিকাংশ মানুষই ওজন বাড়ানোর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সঠিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো শুধু শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, বরং এটি স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের আলোচনায় আমরা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে দ্রুত ওজন কমানোর ৯টি উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। এ সকল উপায়গুলো নিয়মিত মেনে চললে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব, পাশাপাশি শরীর থাকবে সুস্থ এবং সতেজ। পুষ্টিবিদদের মতে, এক মাসে আড়ায় থেকে তিন কেজি কমানো স্বাস্থ্যসম্মত। অর্থাৎ হাতে যদি পাঁচ মাস সময় থাকে, তবে আট-দশ কেজি কমানো লক্ষ্য হতে হবে। 

ওজন কেন বাড়ে?

বাড়তি ওজনের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা দিন দিন বাড়ছে। তবে ওজন কমাতে যে প্রক্রিয়া অনেকে অবলম্বন করছেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা তেমন একটা কার্যকর নয়, হলেও টেকসই হয় না। ওজন বাড়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।

চলুন জেনে নিই প্রধান কারণগুলো কী কী:

অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ: ওজন সাধারণত বাড়ে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের কারণে। যখন শরীর প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালোরি পায়, তখন তা চর্বি হিসেবে শরীরে জমা হয়।  উচ্চ-ক্যালোরির খাবার, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবও এর জন্য দায়ী। অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ দীর্ঘমেয়াদে স্থূলতা, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 

অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস: অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া, এবং অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হয়। এর পাশাপাশি, অপর্যাপ্ত পুষ্টি ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাব ওজন বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। সুষম ও নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখাই হল এর একমাত্র প্রতিকার।  

শরীরচর্চার অভাব: ওজন বাড়ার আরো একটি অন্যতম কারণ হলো শরীরচর্চার অভাব। দৈনিক ক্যালোরি খরচ কম হলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হয়, যা চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। দীর্ঘসময় বসে কাজ করা, হাঁটাহাঁটির অভাব, এবং নিয়মিত ব্যায়াম না করায় শরীরে মেদ জমতে থাকে, যা ওজন বাড়ার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ওজন বৃদ্ধির একটি বিশেষ কারণ। বিশেষ করে থাইরয়েড, ইনসুলিন, কর্টিসল এবং এস্ট্রোজেনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে শরীরের মেটাবলিজম হার কমে যায়, ফলে ওজন বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত ক্ষুধা, ক্লান্তি থাকে এবং চর্বি জমা হতে থাকে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও  চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করা জরুরি। শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। যেমন, থাইরয়েড সমস্যার কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে। 

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: ওজন বাড়ার আরো একটি কারণ হলো মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। মানসিক চাপের কারণে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা অতিরিক্ত ক্ষুধা ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়। উদ্বেগের কারণে শরীর প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করে, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। নিয়মিত মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ।

ওজন বাড়ার কারণ জানার পর, চলুন এবার জেনে নেই স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কীভাবে দ্রুত ওজন কমানো যায়।

9-healthy-ways-to-lose-weight-fast

দ্রুত ওজন কমানোর স্বাস্থ্যসম্মত ৯টি উপায়

১. সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা করুন

একটি সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই, আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি পরিমাণ নির্ধারণ করে নিন। সাধারণত, কম ক্যালোরি কিন্তু পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, মাছ, এবং মুরগির মাংস ওজন কমাতে সহায়ক। এছাড়াও, অর্গানিক শাকসবজি এবং ফলমূল যেমন ব্রকোলি, পালংশাক, আপেল, এবং বেরিজ জাতীয় ফল বেশি করে খাবারের তালিকায় রাখুন।

কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ সীমিত রাখুন এবং সাদা চাল, চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে, বাদামি চাল, ওটমিল এবং উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার বেছে নিন। নিয়মিত খাবার গ্রহণের সময়সূচি মেনে চলুন এবং অভ্যাস গড়ে তুলুন। সঠিক ডায়েটের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান এবং ঘুমানো ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে। খাবারের প্রতি সচেতনতা ও একটি পরিকল্পিত ডায়েটের মাধ্যমে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। একটি সুষম ডায়েট ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২. প্রচুর পানি পান করুন

দ্রুত ওজন কমানোর জন্য পানি একটি অত্যন্ত কার্যকর উপাদান। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, যা ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। খাবারের আগে এক গ্লাস পানি পান করলে ক্ষুধা কম অনুভূত হয়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া এড়ানো সম্ভব। এছাড়া, পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক, যা ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। কখনো কখনো আমরা তৃষ্ণাকে ক্ষুধার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি, ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে ফেলি। তাই পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে শরীর হাইড্রেটেড রাখুন এবং অতিরিক্ত ক্ষুধা থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।

৩. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

নিয়মিত ব্যায়াম করা ওজন কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এটি আপনার শরীরের ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে এবং বিপাক হার বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে ওজন কমানো সহজ হয়। প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত মাঝারি থেকে তীব্র ব্যায়াম যেমন জগিং, সাইক্লিং, বা সুইমিং করা উচিত। এছাড়াও, শক্তি বৃদ্ধি ব্যায়াম যেমন ভার উত্তোলন বা যোগ ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করলে আপনার পেশী শক্তিশালী হয় এবং তা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম করার সময় আপনি আপনার শরীরের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিও লক্ষ্য করবেন। স্ট্রেস কমানো এবং ভালো ঘুমের জন্যও এটি সহায়ক। এমনকি একটানা ব্যায়াম না করতে পারলে ছোট ছোট পদক্ষেপ যেমন সিঁড়ি চড়া বা দীর্ঘ সময় হাঁটাও গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুস্থ জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম একটি অপরিহার্য অংশ।   

৪. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার ওজন কমানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন আপনার শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে, যা ক্যালোরি পোড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।  এছাড়া এটি পেশী গঠনে সহায়ক, যা আরও বেশি ক্যালোরি পোড়া তে সহায়তা করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন: অর্গানিক ডিম, মাংস, মাছ, দুধ, এবং মুগডাল অন্তর্ভুক্ত করা উচিত আপনার খাদ্য তালিকায়। প্রোটিন আপনার ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে, ফলে কম খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এছাড়াও, এটি দীর্ঘ সময় ধরে পরিপূর্ণ অনুভূতি দেয়, যা অকারণ খাবার খাওয়া কমাতে সাহায্য করে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করে আপনি আপনার ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জনে আরও দ্রুত ও কার্যকর হতে পারবেন। এক্ষেত্রে একটি সঠিক পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, যা আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী নির্ধারণ করতে পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করা উচিত। 

দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে খুব সহজেই SUO XI Organic এর Authentic organic food shop থেকে যেকোনো পণ্য অর্ডার করতে পারছেন। এখানে পাচ্ছেন শতভাগ খাঁটি অর্গানিক ফুড (Authentic and Pure Organic Food) ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার।

৫. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন

দ্রুত ওজন কমানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। যখন আপনি ভালোভাবে ঘুমান, আপনার শরীর হরমোনগুলির সঠিক মাত্রা বজায় রাখে, যা ক্ষুধা এবং বিপাক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য  করে। ঘুমের অভাবে শরীরে গ্রেলিন নামক ক্ষুধার হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং লেপটিন নামক পূর্ণতার হরমোনের মাত্রা কমে যায়, ফলে আপনি অধিক খাবার খেতে ইচ্ছুক হন। এর ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়, যা ওজন বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এছাড়া, পর্যাপ্ত ঘুম মেটাবলিজম উন্নত করে এবং শরীরের চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা গভীর এবং আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করুন যা আপনার ওজন কমানোর লক্ষ্যে পৌঁছাতে দ্রুত সহায়তা করবে। অতএব, সুষম ডায়েট এবং নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।  

৬. অতিরিক্ত ঝাল, মসলা ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন 

অতিরিক্ত ঝাল, মসলা ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা দ্রুত ওজন কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এই ধরনের খাবারগুলো সাধারণত উচ্চ ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত হয়, যা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। ঝাল মসলা ও মিষ্টির অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের বিপাক ক্রিয়া ধীর করে দেয় এবং ক্ষুধার অনুভূতি বাড়ায়, যা ওজন বাড়ানোর সম্ভাবনা বাড়াতে থাকে। এভাবে  ওজন কমানোর চেষ্টা করলে পুষ্টিকর খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়া, পরিমিত মিষ্টি ও মসলা ব্যবহার শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক। জলপানও বাড়ানো উচিত, কারণ এটি বিপাক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে ও ক্ষুধার অনুভূতি কমায়। সাধারণভাবে, খাবারের প্রতি সচেতনতা ও সুষম খাদ্যাভ্যাস ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই অতিরিক্ত ঝাল, মসলা, চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করা জরুরি। মিষ্টির বদলে প্রাকৃতিক মিষ্টি যেমন ফলের চিনি গ্রহণ করতে পারেন।

৭. অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন 

অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা দ্রুত ওজন কমানোর জন্য একটি কার্যকরী উপায়। এই অভ্যাসটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে এবং ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। যখন আমরা একবারে অনেক খাবার খাই, তখন শরীর অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করে এবং তা চর্বি হিসেবে জমা হতে পারে। কিন্তু যদি আমরা দিনে ৫-৬ বার অল্প অল্প করে খাবার খাই, তবে শরীরের রক্তের গ্লুকোজ স্তর স্থিতিশীল থাকে এবং খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমে যায়।

এই পদ্ধতিতে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হজম প্রক্রিয়া সুস্থ থাকে। ফলে, ক্ষুধা কমে আসে এবং কম ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, যা ওজন কমানোর লক্ষ্যে সহায়ক। অতএব, অল্প অল্প করে খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণের একটি সহজ ও কার্যকরী উপায়। খাবার গ্রহণের সময় অবশ্যই শাকসবজি, ফলমূল এবং প্রোটিনের সঠিক ভারসাম্য রাখতে হবে।

৮. কোমল পানীয় পরিহার করুন 

কোমল পানীয়তে সাধারণত উচ্চ পরিমাণ চিনি ও ক্যালোরি থাকে, যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। প্রতিদিন কোমল পানীয় পান করলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমে এবং তা চর্বিতে পরিণত হয়, যা ওজন বাড়াতে সহায়ক। এসব পানীয়ের পরিবর্তে পানি, নারকেলের পানি বা ফলের রস পান করা উচিত। এভাবে আপনি অতিরিক্ত ক্যালোরি থেকে মুক্তি পাবেন এবং হাইড্রেটেড থাকবেন।

কোমল পানীয় পরিহার করার মাধ্যমে আপনার শরীরের ইনসুলিন স্তর নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং অতিরিক্ত চর্বি জমার সম্ভাবনা কমবে। এছাড়া, কোমল পানীয়তে থাকা কৃত্রিম রং এবং রাসায়নিক উপাদানগুলিও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কোমল পানীয় পরিহার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

৯. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন 

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা দ্রুত ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত চাপের কারণে শরীরে কর্টিসল হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়, যা চর্বি জমাতে সহায়ক। স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম, মেডিটেশন, এবং গভীর শ্বাস গ্রহণ করা সহায়ক। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা যোগব্যায়াম করুন। মেডিটেশন বা প্রার্থনা মানসিক প্রশান্তি আনে এবং চাপ কমায়। সময়মত ঘুমানো এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলাও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

অতিরিক্ত চাপের ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, তাই স্ট্রেস কমিয়ে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। সামাজিক সংযোগ বৃদ্ধি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটান। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে শরীর এবং মন সুস্থ রাখুন, যা আপনার ওজন কমাতে সহায়ক হবে। তাই ওজন কমাতে হলে মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া উচিত।

দ্রুত শরীরের ওজন কমানোর স্বাস্থ্যসম্মত ৯টি উপায়

ওজন বাড়ার ক্ষতিকর দিক

ওজন বেশি হলে তা শরীরের জন্য নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, স্ট্রোক ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও অতিরিক্ত ওজনের কারণে শ্বাসকষ্ট, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং মানসিক চাপের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা ও কাজ করার সময় অস্বস্তি এবং শারীরিক সীমাবদ্ধতাও দেখা দেয়।

ওজন বাড়ার ক্ষতিকর দিকগুলো শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রভাব ফেলে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়। এছাড়া ওজন বাড়ার কারণে উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, এবং কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, যা স্বাস্থ্যগত জটিলতা সৃষ্টি করে।

মোটা মানুষের শরীরে বাতের সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে হাঁটু ও মেরুদণ্ডের জয়েন্টে চাপ পড়ে। এর ফলে চলাফেরার সমস্যা এবং ব্যথা অনুভূত হয়। শ্বাসকষ্ট, স্লিপ এপনিয়া এবং শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যাও ওজন বাড়ার কারণে দেখা দিতে পারে।  এছাড়া, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ওজনের প্রভাব রয়েছে। অতিরিক্ত ওজন মানুষকে আত্মবিশ্বাসহীনতা এবং হতাশার দিকে ঠেলে দেয়। অন্যদিকে, দৈনন্দিন কাজের ক্ষমতাও কমে যায়, কারণ শরীরে অতিরিক্ত মেদ থাকার কারণে শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়।

তাই, সুস্থ জীবনধারার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সঠিক জীবনযাপনের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যা দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

পরিশেষে

ওজন কমানো কোনো একদিনের কাজ নয়, এটি একটি ধৈর্যশীল ও নিয়মিত প্রক্রিয়া। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমাতে হলে সঠিক ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম এবং সঠিক জীবনযাত্রা মেনে চলা জরুরি। উপরের উল্লেখিত ৯টি উপায় আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে, তবে এর জন্য নিয়মানুবর্তিতা ও ধৈর্য প্রয়োজন। আপনার শরীরের চাহিদা বুঝে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে অবশ্যই আপনি দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম হবেন এবং শরীরকে রাখবেন সুস্থ ও সবল।

বাংলাদেশের সবথেকে বড় অর্গানিক ফুড উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক ফুড লি. দীর্ঘদিন ধরে দেশ ও বিদেশের বাজারে স্বাস্থ্যকর অর্গানিক ফুড সরবরাহ (Organic Food Supplier) করে আসছে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে খুব সহজেই SUO XI Organic এর Online grocery shop থেকে যেকোনো পণ্য অর্ডার করতে পারছেন।

Posted in
#Health Tips

Post a comment

Your email address will not be published.

Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare