Need help? Call Us: +88096 13 100 600
মানবদেহের বিভিন্ন জৈবনিক কাজ পরিচালনা, শক্তি সরবরাহ, দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা এবং রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করার প্রাথমিক প্রয়োজনীয় শর্ত হচ্ছে পুষ্টি (nutrition)। খাদ্য (food)-ই মানবদেহে পুষ্টির যোগান দেয় । তবে মানুষ যেসব খাদ্য গ্রহণ করে থাকে তাদের অধিকাংশই দেহকোষের প্রোটোপ্লাজম শোষণ করতে পারে না। ঢেঁকি ছাঁটা চাল একটি প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী খাদ্য উপাদান যা আমাদের খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনের আগে এই চালকে পরিষ্কার করা এবং তা খাওয়ার জন্য ঢেঁকি ব্যবহার করা হতো। ঢেঁকি ছাঁটা চালের বিশেষত্ব হলো এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ যা আধুনিক প্রক্রিয়াজাত চালের তুলনায় অনেক বেশি। এই নিবন্ধে আমরা ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুনাগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
বাংলাদেশের অন্যতম অনলাইন ভিত্তিক অর্গানিক ফুড বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান SUO XI Organic LTD. তাদের Online Grocery Shop এ সকল প্রকার ন্যাচারাল ও খাঁটি পণ্য বিক্রয় করে থাকে। একদম নিজস্ব খামারে প্রাকৃতিক উপায়ে কোন প্রকার রাসায়নিক ও ঔষধ ছাড়া ঢেঁকি ছাঁটা চাল উৎপাদন করে।
ঢেঁকি ছাঁটা চাল কি?
ঢেঁকি ছাঁটা চাল (Brown Rice) একটি সম্পূর্ণ শস্য (whole grain)। ঢেঁকি ছাঁটা চাল হলো বাংলাদেশের একটি প্রাচীন পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত চাল, যেখানে ধান ঢেঁকির মাধ্যমে ছাঁটা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ধানের খোসা এবং ছাল অপসারণ করা হয়, কিন্তু চালের বাইরের আবরণ সম্পূর্ণভাবে অপসারিত হয় না। ফলে চালের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। এই চাল থেকে ভাত রান্না করলে তা তুলনামূলক বেশি পুষ্টিকর হয় এবং এতে ফাইবার ও ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশি থাকে। এর মানে এতে শস্যের সমস্ত অংশ রয়েছে যেমন, ফাইবারস ব্রান, পুষ্টিকর বীজ বা অংকুর এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ এন্ডোস্পার্ম। এইগুলি শস্যের সবচেয়ে পুষ্টিকর অংশ। এটির শক্ত তুষে ও বাইরের আবরনের কারণে রান্না করতে কিছুটা সময় লাগে। সাদা চালে এ সমস্ত পুষ্টি উপাদান কিছুটা কম মাত্রায় থাকে। সাদা চালে খুব কম প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে। সাদা চাল নরম এবং দ্রুত রান্না হয়। পুষ্টি উপাদানের ক্ষেত্রে সাদা চালের তুলনায় ঢেঁকি ছাঁটা চালে বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এতে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। সেইসাথে আরও ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে।
ঢেঁকি ছাঁটা চালের উপকারিতা
ঢেঁকি ছাঁটা চালের (Brown Rice) বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত একটি প্রক্রিয়া, যেখানে ধানের খোসা ঢেঁকিতে ছেঁটে চাল বের করা হয়। এই চাল স্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়, কারণ এতে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান অক্ষত থাকে। ঢেঁকি ছাঁটা চালের কিছু উপকারিতা হলঃ
- পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণ: ঢেঁকি ছাঁটা চালে ব্রান বা চালের তুষ থাকে, যা ফাইবার, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি স্বাস্থ্যকর এবং খাদ্য হজমে সহায়ক।
- কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স: এই চালে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: ঢেঁকি ছাঁটা চালের ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে, যা দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভর্তি রাখে এবং ক্ষুধা কমায়, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- হজম প্রক্রিয়া উন্নত করা: এই চালের ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- প্রাকৃতিক গন্ধ এবং স্বাদ: ঢেঁকি ছাঁটা চালের প্রাকৃতিক গন্ধ এবং স্বাদ সাধারণ চালের তুলনায় বেশি। এটি সজীব ও সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা: ঢেঁকি ছাঁটা চালে থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ঢেঁকি ছাঁটা চালের আরো কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
১. ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে।
২. হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
৩. শরীরের অভ্যন্তরীণ জীবাণু ধ্বংস করে
৪. শারীরিক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
বাংলাদেশের অন্যতম অর্গানিক ফুড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক লি. বিভিন্ন রকম ন্যাচারাল ফুড উৎপাদন করে আসছেন যেমনঃ ওমেগা-3 ডিম, লীক সবজি, খাটি সরিষার তেল, ঢেঁকি ছাটা লাল চাল ইত্যাদি। তাদের Online Grocery Store থেকে যেকোন সময় অর্ডার করার সুযোগ রয়েছে।
ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে
ঢেঁকি ছাঁটা চালে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার থাকে যা উভয়ই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গবেষণা পরামর্শ দেয় যে নিয়মিত গোটা শস্য(whole grain) যেমন ঢেঁকি ছাঁটা চালের মতো শসা খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং টাইপ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। এমনকি সাদা চালের পরিবর্তে ঢেঁকি ছাঁটা চাল (Brown Rice) খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায় এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। অন্যদিকে, প্রচুর পরিমাণে সাদা ভাত খাওয়ার সাথে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটি এর উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচক (GI) এর কারণে হতে পারে। জিআই পরিমাপ করে যে, একটি খাবার কত দ্রুত আপনার রক্তে শর্করা বাড়ায়। ঢেঁকি ছাঁটা চালের জিআই প্রায় ৫০ এবং সাদা চালের একটি জিআই প্রায় ৮৯, অর্থাৎ সাদা চাল ঢেঁকি ছাঁটা চালের চেয়ে অনেক দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে
৪৫টি গবেষণার বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে যারা চাল সহ সবচেয়ে বেশি গোটা শস্য খেয়েছেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি তুলনামূলক ১৬-২১% কম ছিল তাদের তুলনায় যারা সবচেয়ে কম গোটা শস্য (whole grain) খেয়েছে। ঢেঁকি ছাঁটা চালের মতো গোটা শস্য এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল কমাতে পারে। ঢেঁকি ছাঁটা চাল HDL (ভাল) কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
শরীরের অভ্যন্তরীণ জীবাণু ধ্বংস করে
ঢেঁকি ছাঁটা চালের তুষে অনেক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিক্যালকে ধ্বংস করতে এবং শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিতির কারণে, ঢেঁকি ছাঁটা চালের মতো গোটা শস্য হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়াও, ঢেঁকি ছাঁটা চালের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে, যা শরীরকে টক্সিন মুক্ত রাখতে সাহায্য করে এবং সেলুলার প্রদাহ কমায়।
শারীরিক প্রদাহ কমায়
ঢেঁকি ছাঁটা চাল (Dheki Chata Chal), যা প্রাচীন পদ্ধতিতে তৈরি হয়। এটি শারীরিক প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে উপকারী। এই চালের প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতিতে চালের পুষ্টিগুণ সংরক্ষিত থাকে, যা প্রদাহ প্রতিরোধে সহায়ক। ঢেঁকি ছাঁটা চালে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেশিয়াম, এবং ফাইবার থাকে, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, যা প্রদাহের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত ঢেঁকি ছাঁটা চাল খেলে প্রদাহের মাত্রা কমে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ চালের সাথে ঢেঁকি ছাঁটা চালের পার্থক্য কি?
ঢেঁকি ছাঁটা চাল এবং সাধারণ চালের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি এবং পুষ্টিমান। ঢেঁকি ছাঁটা চাল তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে, যেখানে চালের উপরিভাগের তুষ এবং কিছু অংশ বাদামি স্তর সহ রেখে দেওয়া হয়। এর ফলে ঢেঁকি ছাঁটা চালে বেশি পরিমাণে আঁশ, ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। অন্যদিকে, সাধারণ চাল প্রক্রিয়াকরণের সময় এই স্তরগুলো সরিয়ে ফেলা হয়, যার ফলে চালটি চকচকে এবং সাদা হয়ে ওঠে। তবে এতে পুষ্টিমান কমে যায়। ঢেঁকি ছাঁটা চাল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, সাধারণ চালের তুলনায় রান্নার সময় একটু বেশি লাগে এবং এটি খেতে কিছুটা শক্ত হতে পারে।
ঢেঁকি ছাঁটা চালে নিম্নোক্ত উপকারিতাগুলো পাওয়া যায়
- ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- শারীরিক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
ঢেঁকি ছাঁটা চালের পুষ্টি উপাদানের তুলনামুলক চিত্র নিম্নোক্ত
পুষ্টি উপাদান | ঢেঁকি ছাঁটা চাল | সাদা চাল |
থায়ামিন | ১৫% | ১৪%
|
নিয়াসিন | ১৬% | ৯% |
ভিটামিন বি৬
|
৭% | ৫% |
ম্যাগনেসিয়াম
|
৯% | ৩% |
ফসফরাস
|
৮% | ৩% |
আয়রন
|
৩% | ৭% |
জিঙ্ক
|
৬% | ৪% |
ঢেঁকি ছাঁটা চাল কোন কোন রোগের জন্য কার্যকরী
ঢেঁকি ছাঁটা চাল নানা ধরনের রোগের জন্য কার্যকরী হতে পারে। এটি সাধারণত নিম্নলিখিত রোগের জন্য সহায়ক:
ডায়াবেটিস: ঢেঁকি ছাঁটা চালের কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। গবেষণা দেখা যায় যে, নিয়মিত ঢেঁকি ছাঁটা চালের খাওয়া হলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। অন্যদিকে, প্রচুর পরিমাণে সাদা ভাত খাওয়ার সাথে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ঢেঁকি ছাঁটা চালের জটিল কার্বোহাইড্রেট ধীরে ধীরে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়, যা রক্তের চিনির মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
হৃদরোগ: ঢেঁকি ছাঁটা চালের খাদ্যগুণ হৃদরোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। ঢেঁকি ছাঁটা চালে ফাইবারের পরিমাণ বেশি, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ঢেঁকি ছাঁটা চালের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, এর গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ঢেঁকি ছাঁটা চালের জুড়ি মেলা ভার। এই চালের ফাইবার, ভিটামিন বি, এবং মিনারেলস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এই চালে প্রচুর ফাইবার থাকে যা খারাপ কোলেস্টেরল জমতে দেয় না নিয়মিত এই চাল সেবনে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পেটের সমস্যা ও আইবিএস : ঢেঁকি ছাঁটা চালের ফাইবার পাচন প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটফাঁপা, ও আইবিএস দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই চালে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোলনকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ঢেঁকি ছাঁটা চাল নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং পেটের গ্যাস, ফোলাভাব, ও ব্যথা কমে যায়। এছাড়া, এতে প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজ থাকে যা অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাই যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন বা আইবিএস-এর লক্ষণ রয়েছে, তাদের খাদ্য তালিকায় ঢেঁকি ছাঁটা চাল অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে: ঢেঁকি ছাঁটা চাল প্রাকৃতিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। যার ফলে এতে ফাইবার ও পুষ্টিগুণ বজায় থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ঢেঁকি ছাঁটা চালে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার থাকে যা উভয়ই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই চাল রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) এর মাত্রা কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ: ঢেঁকি ছাঁটা চাল ওজন নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই চালটি কৃত্রিম প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় এতে খাদ্যশস্যের সবথেকে পুষ্টিকর অংশগুলো বজায় থাকে। ঢেঁকি ছাঁটা চালে ফাইবার, ভিটামিন বি, খনিজ পদার্থ, এবং ফাইবার বেশি থাকে, যা শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। এর ফলে, এটি দ্রুত পেট ভরিয়ে দেয় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়। নিয়মিত ঢেঁকি ছাঁটা চাল খেলে রক্তে শর্করার স্তর স্থিতিশীল থাকে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।
তবে, নির্দিষ্ট রোগের জন্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
আসল ঢেঁকি ছাঁটা চাল কোথায় পাওয়া যায়
ঢেঁকি ছাঁটা চাল (Dheki Chata Chal), যেটিকে অনেকেই লাল চাল বলে থাকেন। বাংলাদেশে এখন অনেকটাই বিরল হয়ে গেছে এই ঢেঁকি ছাঁটা চাল। এই চাল তৈরি করতে মূলত পুরনো পদ্ধতিতে চালকে ঢেঁকিতে ছেঁটে নেওয়া হয় বা পাড় দেওয়া হয়, যা একটি ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় চালের ভুসি বা তুষ অপসারণ করা হয় এবং চালের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ রক্ষিত থাকে। আধুনিক মেশিনে ছাঁটা চালের তুলনায় ঢেঁকি ছাঁটা চাল অনেক বেশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়।
এই আসল ঢেঁকি ছাঁটা চাল বর্তমানে খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় কিছু কিছু বাজারে ঢেঁকি ছাঁটা চাল পাওয়া যায়। খুলনা, কুষ্টিয়া, গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, বগুড়া, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামীণ এলাকাগুলোতে এখনো কিছু কৃষক ঢেঁকি ছাঁটা চাল উৎপাদন করে থাকেন। ঢাকার বাইরে গিয়েও আপনি এই চাল খুঁজে পেতে পারেন।
এছাড়া কিছু বিশেষায়িত অর্গানিক দোকান ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মও ঢেঁকি ছাঁটা চাল বিক্রি করে থাকে। সেই রকম একটি প্রতিষ্ঠান হল শশী অর্গানিক ফুড লিমিটেড। এখানে ঢেঁকি ছাঁটা চালকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে প্রস্তুত করা হয় এবং কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। এর ফলে এদের ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুণগতমান অক্ষুন্ন থাকে এবং তা সাদা চালের তুলনায় বেশি উপদেয় হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের অন্যতম অর্গানিক ফুড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক লি. খাঁটি ঢেঁকি ছাঁটা চাল উৎপাদন করে আসছে। তাদের Online Grocery Shop ও আফিশিয়াল আউটলেট থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
শশী ঢেঁকি ছাঁটা চালের বিশেষত্ব কি?
বাংলাদেশের অন্যতম অর্গানিক ফুড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক ফুড লিমিটেড সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ঢেঁকি ছাঁটা চাল (Dheki Chata Chal) উৎপাদন করে থাকে। একটি বিশেষ ধরনের ধান থেকে এই চাল প্রস্তুত করা হয়, যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক মুক্ত থাকে। শশী অর্গানিক ফুড লি. “লক্ষী দিঘা” ধান থেকে এই চাল উৎপাদন করে থাকে। এই ধান চাষে কোন প্রকার ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। এই চাল উৎপাদনের জন্য পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, যা মাটি এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়। এই প্রক্রিয়াটি চালের ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সম্ভব হয় না।
পরবর্তীতে সেই ধানকে প্রাকৃতিক উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে কাঠের তৈরী ঢেঁকিতে ভেঙে বাজারজাত করা হয়। যার ফলে চালের সকল পুষ্টিকর গুণাগুন বজায় থাকে। শশী ঢেঁকি ছাঁটা চালের আরেকটি বিশেষত্ব হলো এর অনন্য স্বাদ এবং সুগন্ধ। এর প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকরণের কারণে এই চালের স্বাদ ও গন্ধ অত্যন্ত উন্নতমানের, যা আপনার খাবারে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে। আর এ জন্যই শশী অর্গানিক ফুডের ঢেঁকি ছাটা চাল বাংলাদেশের সেরা। স্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রতি যাদের আগ্রহ রয়েছে, তারা এই ঢেঁকি ছাঁটা চালের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারেন। কারণ শশীর ঢেঁকি ছাঁটা চাল সাধারণ মেশিনে ছাঁটা চালের তুলনায় বেশি ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ।
এছাড়া, এই প্রতিষ্ঠান চালের প্যাকেজিং এবং বিতরণ পদ্ধতিতেও সর্বোচ্চ মান বজায় রাখে, যা চালের মান এবং পুষ্টিগুণ অটুট রাখতে সাহায্য করে। সব মিলিয়ে, শশী অর্গানিক ফুডের ঢেঁকি ছাঁটা চাল শুধু একটি খাদ্য নয়, এটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার একটি অপরিহার্য অংশ। যারা পুষ্টিকর এবং প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট বিকল্প হতে পারে।
শেষকথা
ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুনাগুণ ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বলা যায়, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রথমত, ঢেঁকি ছাঁটা চাল অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং এতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের দেহের নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও, এই চালের খোসা এবং আচ্ছাদিত অংশে থাকা ফাইবার শরীরেr বিভিন্ন জটিল সমস্যা নিরাময়ে সহায়ক। স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের অংশ হিসেবে এটি বিভিন্ন মরণঘাতী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সুতরাং, ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুনাগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা বিবেচনায় এটি আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
বাংলাদেশের সবথেকে বড় ও অথেনটিক অর্গানিক খাবার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক ফুড লি. সবথেকে উৎকৃষ্ট মানের শতভাগ অর্গানিক উপায়ে ঢেঁকি ছাঁটা চাল (Dheki Chata Chal) উৎপাদন করে আসছে। শশী অর্গানিক এর অনলাইন গ্রোসারি শপে (Organic grocery store In Online) এ খুব সহজেই মরিঙ্গা চা সহ সকল প্রকার অর্গানিক প্রোডাক্টস অর্ডার করা যায়।