সজনে পাতার চায়ের উপকারিতা

মরিঙ্গা কি?

আপনি কী জানেন সজনে গাছের বৈজ্ঞানিক নাম মরিঙ্গা ওলেইফেরা, যা ৩০০ ধরনের রোগের সমাধানে একাই একশো? অসম্ভব ঔষধি গুণে ভরপুর থাকার কারণে মরিঙ্গাকে মিরাকেল ট্রি বলা হয়ে থাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানীরা মরিঙ্গাকে পুষ্টির ডিনামাইট তথা ন্যাচারাল মাল্টি-ভিটামিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই গাছের পাতাকে বলা হয় ‘সুপার ফুড অব নিউট্রিশন’। এটি প্রায় ৩০০ ধরণের রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।  

মরিঙ্গা পাতার চা (Moringa Tea)  এবং এর পাতার গুঁড়োর রয়েছে বিশেষ গুণাগুণ। জেনে অবাক হবেন যে, মরিঙ্গার পাতার গুড়ায় (Moringa Powder) রয়েছে কলার থেকে ১৫ গুণ বেশি পটাসিয়াম রয়েছে, দুধের চেয়েও বেশি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও জিংক রয়েছে। এই মরিঙ্গা পাতাকে শাক হিসেবে খাওয়া হয়। এতে শরীরের শ্রমজনিত ক্লান্তি এবং শরীরের ব্যথা থাকলে তা সহজেই দূর হয়। এই নিবন্ধে আমরা মরিঙ্গা চা এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।  

মরিঙ্গা চা কি? 

সজনের ইংরেজি নাম Drumstick এবং বৈজ্ঞানিক নাম Moringa Oleifera উৎপত্তিস্থল পাক-ভারত উপমহাদেশ হলেও এ গাছ শীত প্রধান দেশ ব্যতীত সারা পৃথিবীতেই জন্মে। মরিঙ্গা বা সজনে চা (Moringa Tea) হলো সজনে গাছের পাতা দিয়ে তৈরি একটি ভেষজ পানীয়। এই চা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এছাড়া সজনে একটি সুস্বাদু সবজি। বারোমাসি সজিনার জাত প্রায় সারা বছরই বার বার ফলন দেয়। আমাদের দেশে ২-৩ প্রকার সজনে পাওয়া যায়। 

সজনে গাছের বৈশিষ্ট্য

সজিনা মূলত একটি দ্রুত বর্ধনশীল গাছ। যদিও আমরা এটি ক্রান্তীয় অঞ্চলে জুড়ে পাই। ইতিহাস বলে এমন একটি গাছ যা এশিয়ান চিকিৎসা ক্ষেত্রে বহু শতাব্দী ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি নির্জন অঞ্চলগুলিকে পুনর্নির্মাণের জন্যও ব্যবহৃত হয়। এছাড়া পরিবেশের সাথে এর উচ্চ অভিযোজন এই গাছের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই গাছের পাতা এবং বীজ উভয়ই উপকারী। এগুলি আমাদের দেহের সার্বিক উন্নতিতে ব্যবহার করা হয়। এর পাতা ছোট এবং গোলাকার হয়। এই পাতায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, পটাসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি ইত্যাদি প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়।  

মরিঙ্গা পাতা বা সজনে পাতার গুণাগুণ

বিজ্ঞানীরা মনে করেন সজিনার পাতা পুষ্টিগুণের আঁধার। নিরামিষভোগীরা সজিনার পাতা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারেন। পরিমাণের ভিত্তিতে তুলনা করলে একই ওজনের সতেজ  সজনে পাতায় কমলা লেবুর ৭ গুণ ভিটামিন-সি, দুধের ৪ গুণ ক্যালসিয়াম এবং দই থেকে দুই গুণ আমিষ, গাজরের ৪ গুণ ভিটামিন-এ, কলার ৩ গুণ পটাশিয়াম বিদ্যমান।

বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, সজিনা পাতায় ৪২% আমিষ, ১২৫% ক্যালসিয়াম, ৬১% ম্যাগনোসিয়াম, ৪১% পটাশিয়াম, ৭১% লৌহ, ২৭২% ভিটামিন-এ এবং ২২% ভিটামিন-সি সহ দেহের আবশ্যকীয় বহু পুষ্টি উপাদান থাকে। এক টেবিল চামচ শুকনা সজনে পাতার গুঁড়া থেকে ১-২ বছর বয়সী শিশুদের অত্যবশ্যকীয় যা ১৪% আমিষ, ৪০% ক্যালসিয়াম, ২৩% লৌহ  ও ভিটামিন-এ সরবরাহ করে থাকে। আপনি জানেন কি, দৈনিক ৬ চামচ সজনে পাতার গুঁড়া একটি গর্ভবর্তী বা স্তন্যদাত্রী মায়ের চাহিদার সবটুকু ক্যালসিয়াম ও আয়রন সরবরাহ করতে সক্ষম।  

সজনে পাতার চা 

সজনে পাতা শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায় অথবা সালাদের সঙ্গে কাঁচা খাওয়া যায়। তবে এ পাতার আরেকটি বিশেষ ব্যবহার রয়েছে, সেটি হলো মরিঙ্গা পাতার চা।  

মরিঙ্গা চা খাওয়া যায় দুইভাবেঃ

 ১. মরিঙ্গা পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে সংরক্ষণ করা যায়। পরে চায়ের পাতার মতো ব্যবহার করা যায়। অথবা শুকনা পাতা ফুটানো পানিতে দিয়েও চা বানানো যায়।

২. তাজা সজিনা পাতা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো খাওয়া যায়। নিয়মিত মরিঙ্গা চা খাওয়ার অভ্যাস করা হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে।   

মরিঙ্গা চায়ের উপকারিতা 

মরিঙ্গাকে বলা হয় সুপার ফুড অফ নিউট্রিশন। এর পাতা থেকে শুরু করে ফল, ফুল, গাছের বাকল ইত্যাদি মানবদেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে এবং রোগের অসুস্থতায় দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মরিঙ্গা চায়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এই চায়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ  

১. মানুষের শরীরের প্রায় ২০% প্রোটিন যার গাঠনিক একক হলো এমাইনো এসিড। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্ত্বীয় কার্যাবলী পরিপূর্ণরূপে সম্পাদনে এমাইনো এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষের শরীরের যে ৯ টি এমাইনো এসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়, তার সবগুলোই এই মরিঙ্গার মধ্যে বিদ্যমান। 

২. এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন ভিটামিন ঘাটতি জনিত রোগের বিরুদ্ধে বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।

৩. এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে এবং পালংশাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রণ বিদ্যমান, যা এ্যানেমিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. মরিঙ্গা চা শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও অন্যতম অবদান রাখে।

৫. এটিতে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এটি যকৃত ও কিডনী সুস্থ্য রাখতে এবং সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবেও কাজ করে থাকে।  

৬. নিয়মিত মরিঙ্গা চা সেবন শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমকে আরো শক্তিশালী করে এবং ‘ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট’ হওয়ার দরুন এটি ‘এইডস’ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

৭. এই চা শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও পুষ্টিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। 

৮. মরিঙ্গা চা শরীরের ওজন কমাতে ব্যায়ামের পাশাপাশি এটি বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। 

৯. সজনে চায়ে প্রায় ৯০টিরও বেশি উপাদান এবং ৪৬ রকমের এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এতে ৩৬ টির মত এন্টি-ইনফ্ল্যামমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।   

১০. সজিনা চা শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করে। শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য, ভারি ধাতু অপসারণ এবং শরীরে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি নিতে সহায়তা করে। 

১১. শ্বাসকষ্ঠ, মাথাব্যথা, মাইগ্রেন, আর্থাইটিস এবং চুলপড়া রোগের চিকিৎসায়ও মরিঙ্গা চা কার্যকর ভূমিকা রাখে।  

১২. এ পাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। তাই সজিনা চা পান করা হলে তা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। 

১৩. সজিনা পাতায় প্রচুর ফাইবার থাকে এবং এতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড থাকে, যা স্বাভাবিকভাবে ওজন কমাতে ও শরীরে জমে থাকা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমানোর জন্য সজনে-চা খুব উপকারী ভূমিকা পালন করে। 

১৪. মরিঙ্গা পাতায় আইসো থায়োসায়ানেট থাকে। ফলে নিয়মিত সজনে পাতা খাওয়া হলে তা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মরিঙ্গা পাতার চা বেশ উপকারী।

তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মরিঙ্গা পাতার চা রাখা হলে তা বিভিন্ন দিক থেকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। 

মরিঙ্গা বা সজিনা পাতার আরো কিছু উপকারিতাঃ 

১. সজিনা পাতায় দুধের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাই এটি হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য উপকারী।

২. প্রতি ১০০ গ্রাম সজনে পাতায় একটি কমলার চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে। তাই এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে।

৩. মানুষের শরীরে খাদ্যের মাধ্যমে যে অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো সরবরাহ করতে হয়, তার প্রায় সব কটিই আছে সজনে পাতায়।

৪. সজিনা পাতা অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর। তাই এটি পুরুষের যৌনক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

৫. সজনে পাতায় বায়োটিন, ভিটামিন বি৬, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ই ও ভিটামিন এ থাকে, যা চুল পড়া বন্ধ করে। এ ছাড়া এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলকে প্রাণবন্ত ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হতে সাহায্য করে। 

৬. সজনে পাতায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ই ইত্যাদি থাকে, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া এতে ভিটামিন সি থাকে, যা নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদনে সাহায্য করে। এই নাইট্রিক অক্সাইড রক্তনালির কার্যক্ষমতা সঠিক রাখে। ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।

৭. এটি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। পাতা থেকে তৈরি এক টেবিল চামচ পাউডারে ১৪% প্রোটিন, ৪০% ক্যালসিয়াম, ২৩% আয়রণ বিদ্যমান, যা ১ থেকে তিন বছরের শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোকালীন সময়ে ৬ টেবিল চামচ পাউডার একজন মায়ের প্রতিদিনের আয়রণ এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে।

৮. সজিনা পাতার রস হৃদরোগ চিকিৎসায় এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়।

১০. পোকার কামড়ে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে সজিনার রস ব্যবহার করা হয়।

১১. ক্ষতস্থান সারার জন্য সজনে পাতার পেস্ট বেশ উপকারী। 

মরিঙ্গা চা খাওয়ার নিয়ম 

মরিঙ্গা চা খাওয়ার নিয়মগুলো সহজ এবং বেশ স্বাস্থ্যকর। এখানে নিয়মগুলো উল্লেখ করা হলো:

১. সময় নির্ধারণ:

  • সকালে: খালি পেটে মরিঙ্গা চা পান করলে এটি দেহকে শক্তি দিতে সহায়তা করে এবং দেহের কার্যকারিতা বাড়ায়।
  • রাতে: ঘুমের আগে মরিঙ্গা চা পান করলে এটি মানসিক চাপ কমাতে ও ভালো ঘুম আনতে সহায়তা করতে পারে। 

২. পরিমাণ:

  • প্রতিদিন ৩-৪ কাপ মরিঙ্গা চা পান করা যেতে পারে। প্রথমে এক কাপ দিয়ে শুরু করা ভালো এবং দেহ কীভাবে প্রতিক্রিয়া করে তা দেখে নিতে পারেন। 

ঘরে সজিনা পাতার চা বানানোর নিয়ম 

প্রণালী:

প্রথমে ২ কাপ পানি একটি পাত্রে ঢেলে গরম করুন। পানি ফুটে উঠলে তাপ কমিয়ে দিন। ফুটন্ত পানিতে সজনে পাতা দিন। যদি তাজা পাতা ব্যবহার করেন, তাহলে পাতাগুলো সামান্য চূর্ণ করে পানিতে দিন। আর শুকনো পাতা ব্যবহার করলে সোজা পানিতে দিয়ে দিন। পাতাগুলো পানিতে ৫-১০ মিনিট ধরে জ্বাল দিন যাতে পাতা থেকে সঠিক রঙ ও স্বাদ বের হয়। চায়ের রঙ পরিবর্তিত হতে শুরু করবে। চা তৈরি হয়ে গেলে পাতাগুলো ছেঁকে চা আলাদা করে নিন। যদি চান, তাহলে মধু বা গুড় মিশিয়ে নিতে পারেন। লেবুর রসও যোগ করতে পারেন স্বাদের জন্য। চা গরম গরম পরিবেশন করুন এবং উপভোগ করুন। তবে এক্ষেত্রে পরিমাণ নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ

  • মরিঙ্গা চা ব্যাগ: এক কাপ গরম পানিতে ৩-৫ মিনিট চা ব্যাগ ডুবিয়ে রাখুন, তারপর তা পান করুন।
  • মরিঙ্গা পাউডার: এক কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ মরিঙ্গা পাউডার মেশান। ভালোভাবে মিশিয়ে তা পান করুন।
  • ইচ্ছা করলে স্বাদ বাড়ানোর জন্য এতে দারুচিনি, লবঙ্গ  আদা যোগ করতে পারেন । 

"moringa leaf powder moringa powder suppliers best organic moringa leaf powder moringa powder nutrition facts 1 Teaspoon of Moringa Powder Nutrition Facts moringa powder nutrition facts moringa powder nutritional value chart moringa powder side effects moringa powder for hair moringa powder for weight loss moringa powder vs tea where to get moringa powder "

কোন কোন রোগের জন্য মরিঙ্গা চা বেশি উপকারি 

মরিঙ্গা চা বেশ কিছু রোগের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এগুলো হলো:

  • ডায়াবেটিসঃ মরিঙ্গা চা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মত কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
  • উচ্চ রক্তচাপঃ এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  • হৃদরোগঃ মরিঙ্গা চা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, যা মানবদেহে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। 
  • আর্থ্রাইটিস: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য থাকায় মরিঙ্গা চা জয়েন্টের ব্যথা ও ফোলা কমাতে সহায়ক। অবশতা ও সায়াটিকা প্রতিরোধে সজিনার চা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এর বীজের তেল মালিশ করলে চর্মরোগ দূর হয়। 
  • লিভার ও কিডনিঃ মরিঙ্গা চায়ে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কার্যকারিতা থাকায় এটি লিভার ও কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। 
  • পাচনতন্ত্রের সমস্যাঃ মরিঙ্গা চা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
  • অ্যানিমিয়াঃ মরিঙ্গা চা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক।
  • ইন্টেস্টাইন ও প্রোস্টেট সংক্রমণঃ সজিনা চা এই সমস্ত রোগের সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে।
  • গর্ভকালীন অসুস্থতাঃ গর্ভবতী ও প্রসূতিদের জন্য সজনেপাতা খুবই উপকারী। এটি গর্ভকালীন অসুস্থতা, যেমন মাথা ঘোরানো ,বমি বমি ভাব ,খাবারে অরুচি প্রভৃতি সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া নিয়মিত মরিঙ্গা চা খাওয়া হলে তা মায়ের দুধ উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।

মরিঙ্গা পাতার ব্যবহার

ব্ল্যাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনেঃ খাবার লবন অর্থাৎ ‘সোডিয়াম ক্লোরাইড’ ব্ল্যাড প্রেসার রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অপরদিকে, ‘পটাশিয়াম লবন’ কোন ক্ষতি করেনা। সাজনে ডাঁটাতে সোডিয়াম ক্লোরাইড নেই বললেই চলে। কাজেই এতে ব্ল্যাড প্রেসার নিয়ন্ত্রিত থাকে।

 রক্তসল্পতায়ঃ শরীরে রক্তের পরিমান কমে গেলে পানি দিয়ে সজনেডাঁটা সেদ্ধ করে তা চিবিয়ে খেলে রক্তসল্পতা দূর হয়। তবে বেশ কিছুদিন নিয়মিত খাওয়া দরকার। 

বসন্ত রোগ প্রতিরোধঃ সাজনে ডাঁটা এবং ফুল ভাজা বা তরকারী খেলে জল ও গুটি এ দু’ধরনের বসন্তে আক্রান্ত হবার কোন সম্ভাবনা থাকেনা।

  • সাজিনার ফলের নির্যাস যকৃৎ, প্লীহার অসুখ, ধনুষ্টংকার ও প্যারালাইসিসে উপকারী।
  • মূলের ছাল নাশক, হজম বৃদ্ধিকারক এবং হৃদপিন্ড ও রক্ত চলাচলের শক্তিবর্ধক হিসাবে কাজ করে।
  • মূলের ছালের জলীয় নির্যাস স্নায়ুবিদ দূর্বলতা, তলপেটের ব্যাথা ও হিস্টিরিয়া চিকিৎসার উপকারি।
  • সাজিনার ডাঁটা কৃমিনাশক ও জ্বরনাশক বলে দেশীয় ডাক্তাররা পক্ষাঘাত রোগে প্রয়োগ করেন। এর আঠা গর্ভস্রাবকারক।
  • সাজিনা ডাটার  বীজের তেল বাত রোগের চিকিৎসায় মালিশ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। 
  • সাজিনার মূলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্র প্রবৃত্তি হয়। এর রস হাঁপানি নিবারক ও মূত্রকারক।
  • সাজিনার আঠা দুধে বেটে কপালে লাগালে মাথাব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়। 
  • কৃমিনাশক হিসাবেও সাজিনার ব্যবহার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মূল ও ছালের রস নিয়মিত ৩/৪ দিন খেলে শরীর কৃমি মুক্ত হয়ে যায়। 
  • সাজিনার শিকড় কাশি, হাঁপানি, গেটে বাত, সাধারণ বাত রোগে দুধের সাথে ব্যবহার হয়।
  • সাজিনার পাতা বেটে রসুন, হলুদ, লবন ও গোলমরিচ সহ খেলে ফোলাভাব কমে যায় ও জ্বরে আরাম হয়।  
  • এর ছালের রস গুড়ের সাথে পান করলে শিরঃপীড়া আরাম হয়।
  • সাজিনা পাতা রেধে খেলে ইনফ্লুয়েঞ্জার জ্বর ও যন্ত্রনাদায়ক সর্দিতে আরাম হয়। 
  • সাজিনার শেকড়, লেবুর রস এবং জলফলের মিশ্রন পেটফাঁপা নিবারক।
  • শরীরের কোন অঙ্গ মচকালে বা থেতলালে আদা ও সজনে ছাল বাটা প্রলেপ দিলে  উপশম হয়। 
  • দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে পাতার রস মুখে ধারন করলে ফোলা কমে যায়। 

 

মরিঙ্গা পাতার গুড়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম

অনেকেই সজিনা পাতার পাউডার খাওয়া ও ব্যবহারের নিয়ম জানতে চেয়েছেন । নীচে বর্ণনা করা হলঃ 

কালিজিরা, কাঁচা মরিচ, রসুন এর সাথে সজিনা পাতা ভর্তা একটি মজাদার খাবার। যেকোনো সু্পের সাথে সজনে পাউডার মেশালে খাদ্যের মান বেড়ে যায়। চা কফিতে সজনে পাউডার (Moringa Powder) ব্যবহার করা যায়।

হেলথ: হেলথ ড্রিঙ্ক হিসেবে মরিঙ্গা পাউডার প্রতিদিন পানির সাথে মিশিয়ে খেলে যেসব উপকার পাওয়া যাবে।

  • ওজন কমবে ও নয়ন্ত্রনে থাকবে।
  • ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে থাকবে।
  • ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোলে থাকবে।
  • ইমিউনিটি বাড়বে।
  • রক্ত পরিষ্কার করে স্কিন ব্রাইট করবে।

হেয়ার: মরিঙ্গা পাউডার দ্বারা বিভিন্নভাবে হেয়ার হেয়ার প্যাক বানিয়ে চুলের জন্য ব্যবহার করলে যেসব সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।

  • চুলের গোড়া শক্ত হয়।
  • চুল পড়া কমে।
  • খুশকি দূর করে।
  • চুলকে সিল্কি করে।

 

ত্বকে সজিনার পাতা ব্যবহারে যত উপকার 

১. সজিনার তেল এবং সজিনা পাতার গুঁড়ো ত্বকের ক্ষত, বলিরেখা, কুঁচকানো ভাব, বলিরেখা ও বিভিন্ন দাগ-ছোপ দূর করে ত্বকের সামগ্রিক ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে। 

২. সজিনার তেল ঠোঁটের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। এ তেল ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় রাখে। 

৩. টক্সিনের ফলেই ত্বকে ব্রণ এবং বিভিন্ন দাগ ছোপের সমস্যা দেখা যায়। সজিনার গুঁড়ো কিংবা সজিনার বীজ গ্রহণ করলে রক্ত পরিশ্রুত হয় যার ফলে ত্বক পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর হয়।

৪. সজিনার তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটা ব্যবহার করলে ব্রণর সমস্যা দূর হয়। তবে ব্যবহারের আগে একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া অবশ্যই প্রয়োজন।

৫. সজিনা ত্বকের বিভিন্ন ছিদ্র বন্ধ করতে সাহায্য করে। এটা ত্বকের প্রয়োজনীয় কোলাজেন  প্রোটিন উৎপাদনে সাহায্য করে যা ছিদ্র বন্ধ হতে সাহায্য করে।

 

যেভাবে ব্যবহার করবেন

২ আধ টেবিল চামচ সজিনা পাতা গুঁড়ো করে  সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু, এক টেবিল চামচ গোলাপ জল এবং আধ টেবিল চামচ লেবুর রস যোগ করুন। ঘনত্ব বুঝে প্রয়োজনে পানি যোগ করুন। ঘন এবং মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।  সকালে এটা মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ হবে।

মরিঙ্গা চা কোথায় পাওয়া যায় 

বাংলাদেশের সবথেকে বড় ও অথেনটিক অর্গানিক খাবার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক ফুড লি. সবথেকে উৎকৃষ্ট মানের শতভাগ অর্গানিক উপায়ে সজনে পাতার চা বা মরিঙ্গা চা উৎপাদন করে আসছে। শশী অর্গানিক এর অনলাইন গ্রোসারি শপে (Online grocery store In Dhaka, Bangladesh) এ খুব সহজেই মরিঙ্গা চা সহ সকল প্রকার অর্গানিক প্রোডাক্টস অর্ডার করা যায়।

শশী অর্গানিক ফুড  এমন নাম যা প্রকৃতির স্বাদ ও স্বাস্থ্যের নিখুঁত মেলবন্ধনের প্রতীক।  রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত অর্গানিক খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে তারা মানুষের সুস্থ জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শশী অর্গানিক ফুডের সকল খাদ্য জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করে উৎপাদিত হয়। শশী অর্গানিক ফুড উচ্চমানের বীজ, মাটি এবং জৈব সার ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করে থাকে। ফলে, এসব খাদ্য রাসায়নিক পদার্থমুক্ত এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।   

"moringa leaf powder moringa powder suppliers best organic moringa leaf powder moringa powder nutrition facts 1 Teaspoon of Moringa Powder Nutrition Facts moringa powder nutrition facts moringa powder nutritional value chart moringa powder side effects moringa powder for hair moringa powder for weight loss moringa powder vs tea where to get moringa powder "

শশী অর্গানিক ফুডের মরিঙ্গা চা একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়, যা সাধারণত বাছায়কৃত মরিঙ্গা গাছের পাতা থেকে তৈরি করা হয়। শশী অর্গানিক ফুডের মরিঙ্গা চায়ে নির্দিষ্ট পরিমান আদা (১৫%), দারুচিনি (১৫%) , চা (১০%) ও মরিঙ্গা পাতা (৬০%) থাকে। এটি টি ব্যাগ আকারে তৈরি করা হয়। একটি বক্সে ৩০টি টি-ব্যাগ থাকে। প্রতিটি টি-ব্যাগ থেকে ৩-৪ কাপ চা পাওয়া যায়। এই চা আপনি সরাসরি শশী অর্গানিক ফুডের আউটলেট, ওয়েবসাইট  এবং দারাজ অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মে সল্পমূল্যে পেতে পারেন ।  

শশী মরিঙ্গা চা ভিটামিন ও মিনারেলে সমৃদ্ধ, এবং এটি শক্তি বাড়ানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করা, হজম সহায়ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এই চা বিশেষত যারা প্রাকৃতিক ও অর্গানিক খাবারের প্রতি আগ্রহী, তাদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয়।   

সতর্কতা

যা কিছু খাবেন পরিমাণমতো খাবেন। আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে খাবেন। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আপনি যদি কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত হন বা নিয়মিত কোনো ডাক্তারের তত্বাবধানে থেকে কোনো ওষুধ গ্রহণ করলে খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন। 

 

শেষকথা

সজনে | সাজনা | সজিনা | মরিঙ্গা পাতার উপকারিতা, গুনাগুণ ও ব্যবহার বলে শেষ করা যাবেনা। উপরোক্ত নিবন্ধে সাজনা পাতার উপকারিতা, গুনাগুণ ও ব্যবহার বিশদ আলোচিত হলো। তাছাড়া সজিনা পাতার পাউডার, গুড়া খাওয়ার নিয়ম, ত্বকে সজিনা পাতার ব্যবহার ও উপকারিতা, সজিনা পাতার চা ও এর উপকারিতা বর্ণনা করা হলো। স্থান কাল পাত্র ভেদে সামগ্রিক বিবেচনায় – মরিঙ্গা/সজিনা গাছের পাতা, ফুল, ফল, ছাল ইত্যাদির যথাযথ ও পরিমিত ব্যবহার মানুষের জীবনে বহুবিধ কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। 

বাংলাদেশের সবথেকে বড় ও অথেনটিক অর্গানিক খাবার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শশী অর্গানিক ফুড লি. সবথেকে উৎকৃষ্ট মানের শতভাগ অর্গানিক উপায়ে সজনে পাতার চা বা মরিঙ্গা চা উৎপাদন করে আসছে। শশী অর্গানিক এর অনলাইন গ্রোসারি শপে (Online grocery store In Dhaka, Bangladesh) এ খুব সহজেই মরিঙ্গা চা সহ সকল প্রকার অর্গানিক প্রোডাক্টস অর্ডার করা যায়।

Posted in
#Moringa

Post a comment

Your email address will not be published.

Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare